সংবাদ শিরোনামঃ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদি ইউপি নির্বাচনে মীর শাহআলম চেয়ারম্যান নির্বাচিত লক্ষ্মীপুরের উপশহর দালাল বাজার ইউপি নির্বাচনে এডভোকেট নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত অনিয়মে চাকরিচ্যুত হবেন কর্মকর্তারা, ফেক্ট- উপজেলা পরিষদ নির্বাচন লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ পুরস্কার নিয়ে বির্তক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন লক্ষ্মীপুর -১ আসনের ড, আনোয়ার খান এম পির বড় ভাই আখতার খান রায়পুর উপজেলার উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পুনরায় অধ্যক্ষ মামুনের চেয়ারম্যান হওয়া প্রয়োজন লক্ষ্মীপুর জেলায় ৮ম: বারের মতো শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হলে মোঃ এমদাদুল হক দালাল বাজার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে কাকে ভোট দিবেন? লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদপ্রার্থী কাজল খাঁনের গণজোয়ার লক্ষ্মীপুরের উপশহর দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পাঁচজন,কে হবেন চেয়ারম্যান ? বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ওমান সুর শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেনের ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক এমপি ও মন্ত্রী হতে নয় বরং মানুষের পাশে দাঁড়াতে আ.লীগ করি, সুজিত রায় নন্দী বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই লক্ষ্মীপুরে বিনা তদবিরে পুলিশে চাকরি পেল ৪৪ নারী-পুরুষ
২৫শ টাকার সরকারি সহায়তা তালিকায় ১ মোবাইল নম্বর ২০০ বার!

২৫শ টাকার সরকারি সহায়তা তালিকায় ১ মোবাইল নম্বর ২০০ বার!

বিশেষ প্রতিনিধি ভিবি নিউজ -করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে আড়াই হাজার টাকার নগদ সহায়তা কার্যক্রমে উপকারভোগীদের তালিকায় হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবার এ সহায়তা পাবে। তবে তালিকায় একই মোবাইল নম্বর ভিন্ন নামে ব্যবহার হয়েছে সর্বোচ্চ ২শ বার। রয়েছে অনেক বিত্তশালী এবং জনপ্রতিনিধির আত্মীয়-স্বজনের নামও।

অনিয়মের ফলে অনেক অসচ্ছলের প্রণোদনা পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। জাতির সংকটময় মুহূর্তে বিপাকে পড়া মানুষদের তালিকায় এই অনিয়ম অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করছেন সচেতন মহল। এ নিয়ে জেলাজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। উপকারভোগীরাও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

জানা যায়, লাখাই উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৬ হাজার ৭২০টি পরিবার পাচ্ছে নগদ আড়াই হাজার টাকা করে সরকারি অর্থ সহায়তা। এর মধ্যে লাখাই ইউনিয়নে ১ হাজার ১৯৪ জন, মোড়াকরি ১ হাজার ১১৩, মুড়িয়াউক ১ হাজার ১৭৬, বামৈ ১ হাজার ২৪৬, করাব ১ হাজার ৬ ও বুল্লা ইউনিয়নে রয়েছেন ৯৮৫ জন। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কাছে খসড়া তালিকা জমা দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মুড়িয়াউক ইউনিয়নে ৪টি মোবাইল নম্বর ব্যবহার হয়েছে ৩০৬ জনের নামের পাশে। আর এই নম্বরগুলো পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মলাইয়ের ঘনিষ্টজনদের। এছাড়া তালিকায় যুক্ত হয়েছে অনেক বিত্তশালী ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়-স্বজনের নাম। রয়েছেন স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের একাধিক সদস্যও।

একটি ওয়ার্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসবাস না থাকলেও লেখা হয়েছে তাদের নাম। অসংখ্যবার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরগুলো হলো- ০১৯৪৪৬০৫১৯৩, ০১৭৪৪১৪৯২৩৪, ০১৭৮৬৩৭৪৩৯১ ও ০১৭৬৬৩৮০২৮৪। এছাড়া আরো ৩০টি নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে ১০ থেকে বারোজনের নামের পাশে।
শুধু মুড়িয়াউকই নয়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই এ ধরনের ভুল হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ২শ বার একেকটি মোবাইল নম্বর ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত এক কর্মচারী।

এ ব্যাপারে মুড়িয়াউক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মলাই জানান, অল্প সময়ের মধ্যে তালিকা তৈরির কারণে ভুল হয়েছে। অসংখ্যবার মোবাইল নম্বর ব্যবহারের ভুলটি করেছেন উপজেলা প্রশাসনের কম্পিউটার অপারেটররা। যেগুলো সংশোধনের কাজ চলমান। বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মুক্তার হোসেন বেনুও জানান একই কথা। পুনরায় শুদ্ধভাবে তালিকা তৈরিতে তিনি তার লোকজনকে নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রশাসনের কম্পিউটার অপারেটররা বাংলানিউজকে জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অসম্পন্ন খসড়া তালিকা দিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা তা সম্পন্ন করি। ভুলবশত একেকটি নম্বর অনেকবার ব্যবহার হয়েছে।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজংয়ের সঙ্গে। মোবাইলে বারবার কল দিলেও তা রিসিভ করেননি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার।

তবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, খসড়া তালিকা জমা দেওয়ার পর আমরা তাতে অনেক অনিয়ম খুঁজে পেয়েছি। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই সমস্যা হয়েছে। একেকটি মোবাইল নম্বর রয়েছে অনেকবার। ইতোমধ্যে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে হালনাগাগাদ তালিকা জমা দেবেন।

অন্যদিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলাসহ ৯টি উপজেলায়ও তালিকা তৈরিতে এ ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতে ব্যাপক সংকটে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী নগদ টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ধরনের অনিয়মের কারণে বঞ্চিত হবেন অনেক অসহায় মানুষ। গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

এক উপকারভোগী বলেন, তালিকায় আমার নামটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে অনিয়মের কারণে পরবর্তী তালিকায় আমি থাকবো কিনা এনিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সাহয্য পেতে বিলম্ব অথবা একেবারেই না পেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, তালিকা এখনও খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে। একই মোবাইল নম্বরে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকলে কেউই অর্থ সহায়তা পাবেন না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সহায়তা হস্তান্তর বন্ধ হয়ে যাবে। তালিকা চূড়ান্ত করে পাঠানোর পরও কোনো ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে ত্রুটি পাওয়া গেলে তা পুনরায় যাচাই হবে।

‘ইতোমধ্যেই হবিগঞ্জ থেকে ১শ জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৯ জন মোবাইলের মাধ্যমে অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। এই তালিকায় তাদেরই নাম থাকবে যারা ইতোপূর্বে সরকারের অন্য কোনো কর্মসূচির আওতায় ছিলেন না।’

সরকারি এ সহায়তা পাবে দেশের ৫০ লাখ পরিবার।


© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developer: Tanveer Hossain Munna, Email : tanveerhmunna@gmail.com