লক্ষ্মীপুর থেকে ভি বি রায় চৌধুরী – ১লা মার্চ দেশের সেরা ইউনানী ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ এর এমডি তথা বাংলাদেশের আধুনিক হামদর্দের রূপকার ড. হাকিম মোঃ ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার শুভ জন্মদিনে লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থার পক্ষথেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয় । জানাযায় ১ মার্চ এইদিনে মায়ের কোল আলোকিত করে ১৯৫৩ সালের তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য ড. হাকিম মোঃ ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া দেশ ও মানবতার কল্যাণে নীরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর পরোপকারী মনোভাব শৈশবেই নিজ গ্রামের মানুষজন এবং সহপাঠীদের নজড়ে আসে। কবির ‘নিজের খাবার বিলিয়ে দিব অনাহারীরর মুখে’ কথাটার বাস্তব রূপ ড. হাকিম মোঃ ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার মধ্যে দেখেছেন তাঁর শৈশবের সহপাঠীরা। প্রাইমারীর সময় বাবার দেওয়া টিপিনের টাকায় টিপিন না করে দারিদ্র্য বন্ধুটির পরীক্ষার ফি দিয়ে দিতেন। প্রাইমারীর গন্ডি পেরুবার পর তাঁর এমন মহতী কাজের পরিধি আরও বৃদ্ধি পায়। ক্লাস ফাইবে বৃত্তি লাভ করার পর বাবার কাছ থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করে দেন,পড়া-লেখার পাশাপাশি টিউশনিও করা আরম্ভ করেন। মেধাবী ছাত্র হওয়ায় বৃত্তিও লাভ করেন। টিউশনি এবং বৃত্তির টাকার কল্যাণে মানুষের উপকার আগের চেয়েও বেশী করতে পেরেছেন। শৈশবেই হৃদয়ে মানব সেবার বিজ বোপনকারী এই মানুষটি বড় হওয়ার পর আল্লাহর ইচ্ছায় মানব সেবার আরও বড় প্লাটফর্ম পেয়ে বসেন। ১৯৭২ সালে সরকারি চাকরী ছেড়ে যোগদান করেন হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ এ। যোগদানের পর থেকে নিজের দ্বায়িত্ব পালন করেন অত্যান্ত নিষ্ঠার সাথে। হঠাৎ এক ক্লান্তিলগ্নের মুখোমুখি হয় হামদর্দ। মৃতপ্রায় হামদর্দ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তৎকালিন ব্যবস্থাপনা পরিষদ। এতে করে হামদর্দের অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়। ১৯৮২ সালে এমনি এক অবস্থায় প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে হামদর্দকে পুনরুজ্জিবিত করার দায়িত্ব নেন তিনি। তাঁর দায়িত্ব গ্রহণকালীন হামদর্দের সম্পদ বলতে ছিল মাত্র ৫০ হাজার টাকা,অন্যদিকে এর বিপরীতে ঋণ ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। বলতে দিধ্বা নেই এই অবস্থায় কোন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়া সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার মতই। কিন্তু তিনি তাতেও সফল। মাত্র ৫০ হাজা টাকা সম্পদ আর বিপরীতে ২ লাখ ৯২ হাজার টাকা দায়দেনা অবস্থায় তিনি যেই হামদর্দের দায়িত্ব নিয়েছেন সেই হামদর্দের রয়েছে এখন প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। হামদর্দ একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান,এর উপার্জন সম্পূর্ণরূপে মানব কল্যাণে ব্যায় হয়।
প্রতিষ্ঠানটির গুরু দায়িত্বে থেকে ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া চাইলে পারতেন হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করতে। কিন্তু তিনি হাজার হাজার কোটি টাকা পরিচালনায় থেকে একটি পয়সাও আত্নসাৎ না করার মহা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। হামদর্দকে সম্পূর্ণরূপে ওয়াকক্ ফ আইনে পরিচালনায় তিনি বদ্ধপরিকর। যেখানে এই কোম্পানীর মাত্র ৫০ হাজার টাকার সম্পদ এবং বিপরীতে ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার টাকা দায়দেনা। সেখানে তিনি এই কোম্পানীর ১ কোটি টাকার সম্পদ করে আর সব নিজের করলেও বাহ্বা পেতেন। তিনি তাতো করেন ই নি,বরঞ্চ নিজের মেধা,শ্রম,সময় ব্যক্তিগত কোন প্রতিষ্ঠানে ব্যায় না করে এই ওয়াক্ ফ প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নেই আত্ননিয়োগ আছেন।
শিক্ষিত প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রগঠনের স্বপ্ন থেকেই দেশ প্রেমিক ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং হামদর্দের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছেন অনেকগুলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তন্মধ্যে হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ,হামদর্দ পাবলিক কলেজ,হামদর্দ ইউনানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, হাকীম সাঈদ ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, আয়েশা (রাঃ) মহিলা কামিল মাদ্ রাসা উল্লেখযোগ্য। এই প্রতিষ্ঠানসমুহের মাধ্যমে যেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি সততা,নৈতিকতা,মানবিকতা,সাহসিকতা,দেশ প্রেম ইত্যাদি গুণাবলিতে সমৃদ্ধ হতে পারে সেজন্য তিনি গুরুত্বের সাথে মনিটরিং করেন। এছাড়াও তিনি দেশের অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদের পড়া-শোনায় অনুপ্রাণিত করতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বৃত্তি প্রদান করেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসংখ্য দারিদ্র শিক্ষার্থীর পড়া-শোনার খরচ বহন করেন অতী গপনে। শিক্ষা বিস্তারে তাঁর উদ্যোগ সমুহ বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।