সংবাদ শিরোনামঃ
রায়পুর উপজেলার উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পুনরায় অধ্যক্ষ মামুনের চেয়ারম্যান হওয়া প্রয়োজন লক্ষ্মীপুর জেলায় ৮ম: বারের মতো শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হলে মোঃ এমদাদুল হক দালাল বাজার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে কাকে ভোট দিবেন? লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদপ্রার্থী কাজল খাঁনের গণজোয়ার লক্ষ্মীপুরের উপশহর দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পাঁচজন,কে হবেন চেয়ারম্যান ? বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ওমান সুর শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেনের ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক এমপি ও মন্ত্রী হতে নয় বরং মানুষের পাশে দাঁড়াতে আ.লীগ করি, সুজিত রায় নন্দী বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই লক্ষ্মীপুরে বিনা তদবিরে পুলিশে চাকরি পেল ৪৪ নারী-পুরুষ দুস্থ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা “সমিতি ওমান ” কর্তৃক চট্টগ্রামে ইফতার সামগ্রী বিতরণ দলিল যার, জমি তার- নিশ্চিতে আইন পাস লক্ষ্মীপুরে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে পবিত্র কুমার  লক্ষ্মীপুর সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ আশ্রাফুন নেসা পারুল রায়পুরে খেজুর রস চুরির প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ
লক্ষ্মীপুরে সেই শিশুর মায়ের সন্ধান পেয়ে ফেসবুকে যা লিখেছেন এসপি মাহফুজ্জামান

লক্ষ্মীপুরে সেই শিশুর মায়ের সন্ধান পেয়ে ফেসবুকে যা লিখেছেন এসপি মাহফুজ্জামান

ভিবি নিউজ ডেস্ক -লক্ষ্মীপুরে নিজ শিশুপুত্রকে বৃদ্ধার কোলে রেখে নিরুদ্দেশ হওয়া সেই ভাইরাল শিশুর মায়ের খোঁজ পেয়েছে লক্ষ্মীপুর মডেল থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সুপার মো: মাহফুজ্জামান আশরাফ,পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) লক্ষ্মীপুর জেলা সভানেত্রী সেলিনা মাহফুজ, ডিআইওয়ান মো: আজিজুর রহমান মিয়া ও লক্ষ্মীপুর মডেল থানা পরিদর্শক মো: মোসলেহ উদ্দিনের উপস্থিতিতে নিজের সন্তানকে ভিখারিণীর কোলে রেখে যাবার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন সুরমা বেগম। এ ঘটনার পূর্বাপর নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো:মাহফুজ্জামান আশরাফ।
আপনাদের প্রিয় অনলাইন পোর্টাল ভিবি নিউজ অনলাইন ২৪. কমের মাধ্যমে পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফের লিখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

অবশেষে খুজে পেলাম সেই শিশুর “মা” কে
রিক্রুটমেন্ট ফিজিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় দিন আজ। সারাদিন মাঠে কাজ। একটার পর একটা পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। কোন অবসর নেই। অবিরামভাবে চলছে।

ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে বাসায় আসতেই আবার সাংবাদিকদের মোবাইল। শিশুটিকে কি করা হয়েছে, কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে বক্তব্য নিতে আসে। ক্লান্ত পথেই বাসায় আবার বক্তব্য দিয়ে দিলাম।

ওসি সদর আমার সঙ্গেই ছিলো। গোলঘরে বসে একসাথে চা খেয়ে সকলকে বিদায় দিয়ে দোতলায় উঠে একটু রেষ্ট নিতেই মোবাইলে রিং বেজে উঠলো। ওসি সদরের কল। রিসিভ করলাম। হ্যালো বলতেই ওপ্রান্তে বলে উঠলো,
— স্যার, ঐ বাচ্চাটার মা’কে পাওয়া গিয়েছে।
কথাটা শুনেই চমকে উঠলাম। কি শুনলাম আমি। এত তাড়াতাড়ি এমন খবর পাবো ভাবিনি।
— বললাম,কোথায় পেলেন?
— স্যার,মহিলাটি থানায় এসেছে।

তাই নাকি বলেই মনের ভিতর এক আনন্দ অনুভূতি জাগ্রত হলো। কি যে ভালো লাগলো। বললাম,আমি থানায় আসছি। সেই বাচ্চার মাকে দেখার এক আকাঙ্ক্ষা প্রবল ভাবে বিচ্ছুরিত হলো। তাড়াতাড়ি হাবিবকে গাড়ি লাগাতে বললাম।
নিমা শুনে সেও থানায় যেতে চাইলো। সেই শিশুটিকে দেখার আগ্রহ তার খুব। তাই দুজনেই মিলেই থানায় চলে এলাম।
অনেক সাংবাদিকদের ভীড়। ইতিমধ্যেই উনারাও খবর পেয়েছে। সোজা ওসির রুমে চলে এলাম। একটু পরেই আনা হলো সেই মা’কে। নাম তার ‘সুরমা বেগম’। স্বামী সৌদি প্রবাসী। নাম মিরন।

স্বামীর উপর রাগ করে নিজের ছেলেকে ভিক্ষুকের কোলে রেখে চলে যায়। স্বামী সৌদি প্রবাসী। কিস্তির টাকা স্বামী ঠিকমতো দেয়না বলেই ছোট্ট এই শিশুকে রেখে চলে যায়। তিন কন্যার পরেই ছেলে সন্তানের জন্ম। নাম তার “মাহিম”
ছোট মেয়ের নাম ‘মাহি’ আর দুই মেয়ের নাম ‘নেহা’ ও নুসরাত। ছেলেকে ফেলে এসেছে তা স্বামী জানতে পারলে ভীষণ আপসেট হয়ে যায় আর আল্টিমেটাম দিয়ে দেয়, তার ছেলেকে ফিরে না পেলে, খুঁজে না পেলে তার খবর আছে। আর তাতেই টনক নড়ে সেই মায়ের।

মহিলা বা সেই শিশুর মা’কে দেখে খুব স্বাভাবিক টাইপের মানুষ মনে হলো না। সন্তানটি যে তার এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলেও তার মন মানসিকতা আর সব মায়ের মতো মনে হলো না। শিশুটিকে দেখা মাত্র মায়ের আচরণ যেমনটি প্রতিক্রিয়ার প্রত্যাশা করেছিলাম তেমনটা দেখিনি। কিন্তু তার ছোট মেয়ে বাচ্চাটিকে দেখেই জোরে বলে উঠলো,
— এইতো আমাদের ভাই।

বোনের সাথে ভাইয়ের চেহারার বেশ মিল পাওয়া যায়। আর গায়ের রংও একই। মায়ের চোখে পানি এলো একটু। বলার চেষ্টা করছিলো,তার ছেলের শরীরে এখানে ওখানে দাগ আছে। প্রমান করার চেষ্টা করছিলো। তার মা,শ্বশুর শাশুড়ীও এসেছিলো।
আইনের আওতায় অধিভুক্ত হওয়ায় আদালতের সদয় অনুমতি ও আদেশ ছাড়া,আজ এ শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দিতে পারলাম না। মা ও বোন শিশুটিকে শুধু ছুয়েই দেখলো। এ এক চরম বাস্তবতা। নিজ সন্তানকে কাছে পেয়েও আজ পেলো না। আদালতের আদেশের অপেক্ষায় থাকতে হলো।
লালন পালন করা সেই পালিত মা’র দুচোখ বয়ে অশ্রু বাহিত হচ্ছিলো। যেন তার বুক ছিড়ে যাচ্ছে। তার সন্তান নেই। তাইতো যেন সন্তান পাওয়া আর হারানোর আনন্দ বেদনায় দোলায়িত কষ্টের চাদর বিছিয়ে। কি এক অদ্ভুত পরিবেশের মুখোমুখি হলাম আজ।

— মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া
আজ সেই বাচ্চাটি তার মায়ের সন্ধান পেলো। তার সঠিক গন্তব্য আর সঠিক ঠিকানা ফিরে পেলো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর সাংবাদিকদের অফুরন্ত প্রচারে।
আজ সেই শিশুটি তার মা’কে পেলো।

প্রচন্ড কর্ম ব্যাস্ততার মাঝেও আজ আমরা সফলতার মুখ দেখলাম। কষ্ট যেন নিমিষেই দূর্বল হয়ে যায় সন্তানটি তার মাকে খুঁজে পাওয়া। খুব শান্তি পেলাম, আজ যখনি শুনলাম মাকে পাওয়া গিয়েছে। শোনামাত্রই যেন শান্তি পেলাম।খুব ভালো লাগছিলো। প্রশান্তি পেলাম আজ অনন্য উচ্চতারে।
জয় বাংলাদেশ পুলিশ।


© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developer: Tanveer Hossain Munna, Email : tanveerhmunna@gmail.com