সংবাদ শিরোনামঃ
লক্ষ্মীপুর জেলায় ৮ম: বারের মতো শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হলে মোঃ এমদাদুল হক দালাল বাজার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে কাকে ভোট দিবেন? লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদপ্রার্থী কাজল খাঁনের গণজোয়ার লক্ষ্মীপুরের উপশহর দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পাঁচজন,কে হবেন চেয়ারম্যান ? বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ওমান সুর শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেনের ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক এমপি ও মন্ত্রী হতে নয় বরং মানুষের পাশে দাঁড়াতে আ.লীগ করি, সুজিত রায় নন্দী বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই লক্ষ্মীপুরে বিনা তদবিরে পুলিশে চাকরি পেল ৪৪ নারী-পুরুষ দুস্থ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা “সমিতি ওমান ” কর্তৃক চট্টগ্রামে ইফতার সামগ্রী বিতরণ দলিল যার, জমি তার- নিশ্চিতে আইন পাস লক্ষ্মীপুরে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে পবিত্র কুমার  লক্ষ্মীপুর সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ আশ্রাফুন নেসা পারুল রায়পুরে খেজুর রস চুরির প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে আলোচিত রীয়া ধর্ষণের বিষয়ে আদালতে মামলা
মাদক নির্মূল করুন, মাদক মুক্ত দেশ গড়ুন

মাদক নির্মূল করুন, মাদক মুক্ত দেশ গড়ুন

ভিবি নিউজ ডেস্কঃ

মাদক এক ভয়াবহ আতঙ্কের নাম। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এটি মিশে আছে। এটি বর্তমানে আলোচিত ইস্যুগুলোর মধ্যেও অন্যতম। কিন্তু এর নির্মূলে সকল আইনে যেন ভাটা পড়ে আছে। মাদক উৎপত্তি মুলত মদ থেকে। মদ খেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে যায়, তাই নেশাজাতীয় সকল দ্রব্যকে একত্রে মাদক বলা হয়ে থাকে। মাদক তাকেই বলা হয়, যা সেবন করলে পরে মানুষের শারীরিক ও মানসিক নেতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়। এটি এমন পরিবর্তন সাধন করে যা মানুষের শরীরে সাময়িক আনন্দ বা উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও স্থায়ীভাবে মরণব্যাধিও হয়ে দাঁড়ায়। বলা হয়ে থাকে, ‘সকল অন্যায়ের মূল মাদক’ আবার কেউ কেউ বলেন ‘সকল অপরাধের উৎসমাঠ মাদক’।

এই মাদকের ব্যবহার যেন কমছে না। দিনদিন বৃদ্ধি পেতেই থাকে গণহারে। কারণ এর ক্ষেত্রটিও অত্যন্ত বিস্তৃত। আজকে একটা উৎপাদন হচ্ছে কাল আরেকটি। এভাবে মাদকের মার্কেট প্লেসে কখনো ভাটা পড়ে না, বরং মাদকাসক্তের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই মাদকাসক্ত হওয়া শুরু করে বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদি দিয়ে। পরবর্তীতে বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য তথা মদ, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা ইত্যাদিতে আসক্ত হয়ে পড়ে।

প্রথম প্রথম ভারত থেকে আগত ফেনসিডিলের ব্যাপক প্রচলন থাকলেও বর্তমানে তা মায়ানমার থেকে উৎপাদিত ইয়াবা দখল করে আছে। এই মাদকটি খাওয়ার বড়ি হিসেবে সেবন করে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধাতব ফায়েলে পুড়িয়ে ধোঁয়া হিসেবেও সেবন করে থাকে।

ইয়াবা খেলে সাময়িক আনন্দ ও উত্তেজনা হলেও, অনিদ্রা, খিটখিটে ভাব ও আগ্রাসী প্রবণতা, ক্ষুধা কমে যাওয়া ও বমি ভাব, ঘাম, কান-মুখ লাল হয়ে যাওয়া এবং শারীরিক সঙ্গের ইচ্ছা বেড়ে যাওয়া প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়। বাড়ে হৃৎস্পন্দনের গতি, রক্তচাপ, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং শরীরের তাপমাত্রা। মস্তিষ্কের ?সুক্ষ্ম রক্তনালীগুলোর ক্ষতি হতে থাকে এবং কারও কারও এগুলো ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। কিছুদিন পর থেকে ইয়াবাসেবীর হাত ও পায়ের কাঁপুনিসহ হ্যালুসিনেশন হয়, পাগলামি ভাব দেখা দেয়। একপর্যায়ে ক্যান্সার কিংবা মরণঘাতী হয়ে মারা যায়।

সেই ধারাবাহিকতায় একটি নতুন মাদক দেশে পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। এটির নাম ‘আইস’। এছাড়াও সেবু, ক্রিস্টালম্যাথ ও ডি ম্যাথসহ এর আরো নাম রয়েছে। মেথান ফিটামিন এর ক্যামিক্যাল নাম।

এটির অনেক ক্ষতির দিক রয়েছে। বলা হয়েছে, ১০ গ্রাম ক্রিস্টালম্যাথের দাম এক লক্ষ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবার চেয়ে ১০০ গুণ মারাত্মক মাদক ‘আইস’। এটি সেবনে মস্তিষ্ক বিকৃতিসহ মৃত্যুও ঘটতে পারে। এই মাদকের মূল উপাদান মেথা ফেটামিন বিষ্ণতা থেকে মুক্তি ও প্রাণসঞ্চারে উজ্জীবিত হতে ১৯৫০ সালে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরে তা বিবর্তিত হয়ে ভয়ঙ্কর মাদকে রূপ নেয়। ইন্দ্রিয় অনুভূতি, সাহস ও শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি যৌন উত্তেজনা বাড়াতে এই মাদক পরিচিতি পেলেও এর ক্ষতিকর দিকই বেশি বলে জানা গেছে। এই মাদক সেবনে অনিদ্রা, অতিরিক্ত উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, শরীরে চুলকানিসহ নানা রোগ দেখা দেয়। ধোঁয়ার মাধ্যমের চেয়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে এ মাদক নিলে মাত্র ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে এর কার্যক্রম শুরু হয়। আর এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো কর্মকা- ঘটাতে দ্বিধা করে না এই মাদক গ্রহণকারীরা। এখন সুস্পষ্ট নতুন নতুন মাদক আবিষ্কার/পাচার এবং নতুন নতুন গ্রাহক বৃদ্ধির কারণেই এটির এমন ব্যাপকতা ছড়িয়েছে।

তাহলে এর আসল সমাধন কি?

বাংলাদেশ সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রেখে নানান কর্মসূচি ও অভিযান চালাচ্ছেন। যত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে দেখা যায় এটির ব্যাপকতা তার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিযান পরিচালনায় ঘটছে প্রতিবছর অপ্রত্যাশিত বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-। এদের অধিকাংশকেই বলা হচ্ছে ‘বন্দুক যুদ্ধে নিহত’। এদের কেউই বড় বড় হোল্ডার বা পাচারকারী নয়, এরা সাধারণ মাদক গ্রহণকারী। ফলে রাঘববোয়াল বা বড় বড় হর্তাকর্তারা ধরা ছোঁয়ার বাহিরেই থেকে যাচ্ছে। যার দরুন এটি তার স্বস্পিরিটে ব্যাপক আকার ধারণ করছে। বলা হয়, ‘মাদকের কোনো কমতি নেই, আজকে একটিতো কালকে দুটি’। তাই আজ এর স্থায়ী সমাধানে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মাদক প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। পারিবারিকভাবে শিশুকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। শিশুর বুঝ হওয়ার পর থেকে তাকে ন্যায়-অন্যায় সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তার বিবেকবোধ জাগ্রত জরতে হবে। যাতে সে কখনো সঙ্গদোষেও অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে না যায়। প্রয়োজন অনুপাতে ধর্মীয় জ্ঞান ও শিক্ষা দিতে হবে। পারিবারিকভাবে সন্তানের ওপর খেয়াল রাখতে হবে যে সে কোনো অস্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে কিনা, কেমন বন্ধু বান্ধবের সাথে সে মিশছে। পরিমিত জীবন-যাপন, ভালো বন্ধু নির্বাচন, দায়িত্বশীলতায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পরিবারের কেউ মাদকে আসক্ত হলে তাকে এর খারাপ দিকগুলো বোঝাতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তুলতে হবে। খেলাধূলাসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিয়োজিত থাকতে উৎসাহিত করতে হবে। সামাজিকভাবে মাদক দ্রব্য প্রসার রোধে এর তিক্ত দিক সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। মাদকাসক্তদের সুস্থ করে সমাজে প্রতিষ্ঠা করা। মাদকদ্রব্য সহজলভ্যতা রোধ করা। নৈতিক শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করা। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তবেই এই মরণঘাতী মাদক নিঃশেষ হবে। সুন্দর মানুষ গড়ে উঠবে। বিবেকবান মানুষ হিসেবে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসবে।

মো. মাহমুদুল হাসান : লেখক

(সংগৃহীত দৈনিক জনতা)


© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developer: Tanveer Hossain Munna, Email : tanveerhmunna@gmail.com