ভিবি নিউজ ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে লক্ষ্মীপুর জেলার পৌর শহরে এক সম্ভান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতা আবুল কাসেম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও একজন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিমনা ব্যাক্তিত্ব, মাতা রৌশন আরা বেগম,যার শিক্ষাগত যোগ্যতা এম.এ। পারিবারিক ভাবে সকলেই সঙ্গীত অনুরাগী ছিলেন। তিনি লক্ষ্মীপুর জন্ম গ্রহন করলেও ছোট বেলা থেকেই ঢাকায় বসবাস করতেন। ১৯৮৩খ্রিস্টাব্দে সঙ্গীতে প্রথম হাতেখড়ি তাঁর বাবার হাতেই। তাঁর বাবা এবং মায়ের প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণায় তাঁকে ঢাকার রামপুরায় বুলবুল একাডেমি সঙ্গীতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু করিয়েছেন। সেখানে ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বেতার শিল্পী মানিক বড়ুয়া, টিপু সুলতান, সেলিম মাহমুদ প্রমুখ ওস্তাদের নিকট সঙ্গীতে তালিম নেন।
তিনি মিরপুর বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাঠ সমাপ্ত করেন। সেখানকার চাঁদের হাঁট শিশু সংগঠন, ভাষ্কর শিশু কিশোর সংগঠন এবং মুকুল ফৌজ মিরপুর শাখায় ১৯৮৫-১৯৯০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সক্রিয় সদস্য হিসেবে সঙ্গীতের বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা ও চর্চারত ছিলেন। সেখানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে পুরস্কার অর্জন করেন ।
১৯৯১খ্রিস্টাব্দে তিনি তাঁর জন্মস্থান লক্ষ্মীপুর জেলায় ফিরে আসেন। এখানে ওস্তাদ যদু গোপাল দাস এবং বৃহত্তর নোয়াখালীর সঙ্গীতজ্ঞ ও বেতার শিল্পী ওস্তাদ সত্য গোপাল নন্দী’র ছেলে ওস্তাদ কেশব নন্দীর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহন করেন। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত লক্ষ্মীপুরে পক্ষকাল ব্যাপী (পনের দিন) সঙ্গীত বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সফল ভাবে সম্পন্ন করেন। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় নজরুল ইনস্টিটিউট আয়োজিত নজরুল সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত পাঁচদিন ব্যাপী নজরুল সঙ্গীত প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ সফল ভাবে সম্পন্ন করেন ওস্তাদ সালাউদ্দিন আহমেদ এবং শামছুন্নাহার চৌধুরী’র নিকট।
জনাব ফরিদা ইয়াসমীন লিকা ১৯৯১-১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শিক্ষার্থী অবস্থায় জেলায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সঙ্গীত বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে আসছেন এবং একাধিকবার বিভাগীয় পর্যায়েও পুরস্কার পেয়েছেন।
তিনি ১৯৯১-২০০০খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন জেলা সঙ্গীত একাডেমি, বঙ্গবন্ধু শিল্পীগোষ্ঠী, লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা, আনন্দালয় সাংস্কৃতিক সংগঠন, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলাসহ বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব দিয়েছেন । ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে আগন্তুক শিল্পীগোষ্ঠী’র প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং একই বছরে এটিএন বাংলার সংগীত প্রতিযোগিতায় তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত অংশ গ্রহণের সুযোগ পান।
তিনি ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে “লহরী সাংস্কৃতিক অঙ্গন” প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
জনাব ফরিদা ইয়াসমীন লিকা ২০০৭-২০১৩খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমি’র সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে জেলার বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী হিসেবে শিল্পকলা বুলেটিনে নাম ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে আধুনিক গানের অডিও সিডি আধুনিক গান- ৪ এ তিনি নিজে গীতিকার, সুরকার এবং শিল্পী হিসেবে “তুমি দূরে যদি যাবে চলে” শিরোনামে গাওয়া গান প্রকাশিত হয়। তিনি ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে জেলা শিল্পকলা একাডেমি’র সহ-সভাপতি মনোনীত হয়ে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমান জেলা শিল্পকলা একাডেমি’র এডহক কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করে করে যাচ্ছেন।
১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ টেলিভিশনের “শিক্ষাঙ্গন” অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ২০০০ সালের দিকে কেন্দ্রীয় সম্মিলিত সংস্কৃতিক জোট, ঢাকার সম্মেলনে জেলার শিল্পী প্রতিনিধি হিসেবে সঙ্গীত পরিবেশন এবং জেলার সকল সরকারি, বেসরকারি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জাতীয় দিবস সমুহে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে ভুয়সী প্রশংসা অর্জন করেন।
তাঁর স্বামী শাহজাহান কামাল একজন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিত্ব। তিনি সব সময় তাঁর পাশে থেকে সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগিতা, উৎসাহ ও প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। যাঁর অনুপ্রেরণায় ফরিদা ইয়াসমীন লিকা’র লেখা ও সুর করা একটি অডিও এ্যালবামের কাজ চলমান রয়েছে। তাঁর একমাত্র কন্যা লহরীও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন।
জেলার নন্দিত এ সঙ্গীত শিল্পী ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে রাষ্টীয় স্বীকৃতি জেলা শিল্পকলা একাডেমি, লক্ষ্মীপুর থেকে ‘সঙ্গীত’ বিষয়ে গুণীজন সম্মাননায় মনোনীত হয়েছেন।
( তথ্য সংগৃহীত)