ফেসবুকে উসকানিমূলক বক্তব্যে প্ররোচিত হয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী এলাকার শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুটপাত চালায় স্বার্থান্বেষী মহল। হামলার পর মন্দিরের বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়। ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ দেখে চারজনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত রোববার থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ ও
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মনির হোসেন ওরফে রুবেল (২৮), জাকের হোসেন ওরফে রাবি্ব (২০), মো. রিপন (২১) ও মো. নজরুল ইসলাম ওরফে সোহাগ (৩৬)। তাদের কাছ থেকে মন্দির থেকে লুট হওয়া সাতটি পিতলের প্রতিমা, তিনটি সিদুঁরে কৌটা, ২০টি বাতির কৌটা, দুটি দ্রুপতি, পাঁচটি পঞ্চ বাতির দানি, দুটি হাত ঘণ্টাসহ পূজার বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করে জনসাধারণের মধ্যে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালায়। গত ১৫ অক্টোবর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার চৌমুহনী এলাকায় দুষ্কৃতিকারীরা শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুট চালায়। ঘটনার কিছু ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা হয়। ঘটনার পর হামলা ও লুটকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১ ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রোববার রাত থেকে অভিযান শুরু করে। রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে চৌমুহনীর মন্দিরে হামলা ও লুটপাটে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তার রুবেল, রাব্বী ও রিপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উসকানিমূলক বক্তব্যে প্ররোচিত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশগ্রহণ করে। হামলার পরবর্তীতে গ্রেপ্তার এ তিনজন দুটি বস্তায় মন্দিরের বিভিন্ন পিতলের পূজার সামগ্রীসহ লুট করে নিয়ে যায়। তারা ধাতব জিনিসগুলো বিক্রির পরিকল্পনা করছিল। মন্দিরে মালামাল লুট করার সময় রুবেলের ভিডিও ফুটেজ মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। গ্রেপ্তার রুবেল, রাকিব, রিপন ও সোহাগ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। রুবেলের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার মনির হোসেন সরাসরি হামলায় জড়িত ছিলেন। বাকি তিনজনও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা এমন কোনো তথ্য পাইনি। মূলত তারা বিভিন্ন বক্তব্যে প্ররোচিত হয়ে এ হামলায় অংশ নেন। আগে তারা বিভিন্ন সময়ে ছিনতাইয়ে জড়িত ছিল। পেশায় তারা কেউ ট্রাক ড্রাইভার, কেউ বাসের হেলপার।