সংবাদ শিরোনামঃ
রায়পুর উপজেলার উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পুনরায় অধ্যক্ষ মামুনের চেয়ারম্যান হওয়া প্রয়োজন লক্ষ্মীপুর জেলায় ৮ম: বারের মতো শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হলে মোঃ এমদাদুল হক দালাল বাজার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে কাকে ভোট দিবেন? লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদপ্রার্থী কাজল খাঁনের গণজোয়ার লক্ষ্মীপুরের উপশহর দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পাঁচজন,কে হবেন চেয়ারম্যান ? বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ওমান সুর শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেনের ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক এমপি ও মন্ত্রী হতে নয় বরং মানুষের পাশে দাঁড়াতে আ.লীগ করি, সুজিত রায় নন্দী বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই বাড়ছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই লক্ষ্মীপুরে বিনা তদবিরে পুলিশে চাকরি পেল ৪৪ নারী-পুরুষ দুস্থ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা “সমিতি ওমান ” কর্তৃক চট্টগ্রামে ইফতার সামগ্রী বিতরণ দলিল যার, জমি তার- নিশ্চিতে আইন পাস লক্ষ্মীপুরে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে পবিত্র কুমার  লক্ষ্মীপুর সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ আশ্রাফুন নেসা পারুল রায়পুরে খেজুর রস চুরির প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ
আইভীর হ্যাটট্রিক জয় চায় আওয়ামী লীগ

আইভীর হ্যাটট্রিক জয় চায় আওয়ামী লীগ

ভিবি নিউজ ডেস্ক: মাঠে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষ হয়েছে। এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ব্যালট পেপারে। কে জিতবে আর কে হারবে এ নিয়ে ভোটার এবং কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই উত্তেজনাই বিরাজ করবে। গতকাল শনিবার নাসিক নির্বাচন নিয়ে সবার মধ্যেই টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। সময় যতই এগিয়ে আসছে এই উত্তেজনা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উত্তেজনা-উত্তাপ যাই হোক, আইভীর হ্যাটট্রিক জয়ের বিকল্প ভাবছে না আওয়ামী লীগ। যদিও গত শুক্রবার মধ্য রাত থেকে নাসিক নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এর আগে গত ১৫ দিনের অধিক সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ কৃষক লীগ থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের আশপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন থানা-ইউনিয়নের সরকারি দলটির নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ব্যাপক গণসংযোগ করেছে। নাসিকের পার্শ্ববর্তী থানা ডেমরা-কদমতলী, যাত্রাবাড়ী-শ্যামপুর, মেঘনা, গজারিয়াসহ আশপাশের থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়েও প্রতিদিন নৌকার মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় অবিচল এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তি-আত্মীয়স্বজনদের দ্বারে দ্বারে নানা কৌশলে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন। এতে প্রায় ১৫ দিনের উত্তাপ ছড়ানো নির্বাচনের মাঠ এখন অনেকটাই শান্ত। রোববার আনন্দঘন পরিবেশে দিনভর ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। তারপর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলে জানা যাবে কে হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নগরপিতা। তবে সরকারি দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মনে করছেন হ্যাটট্রিক জয়ে আবারো নাসিকের চেয়ারে আসবেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের কর্মী-সমর্থকদের ধারণা আইভীকে হারিয়ে বিপুল ভোটে নাসিকের দায়িত্বে আসবেন তৈমূর। সরকারি দলের নেতাদের দাবি, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও কৌশলে তৈমূর আলম খন্দকারকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। তাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয়দের মধ্যেও আইভীর বিরোধী বলয়ের সমর্থন পেতে পারেন তিনি। এতে নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বী কেবল তৈমূরই নন, অদৃশ্য ছায়াশক্তি’ কাজ করছে তার বিপক্ষে। তবে সবকিছু পেরিয়েই আইভীর হ্যাটট্রিক জয়ে শতভাগ আশাবাদী টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কেননা নৌকার বিজয় ঠেকাতে পারে এমন কোনো প্রকাশ্য শক্তি নেই। তাছাড়া ভোটাররা ধারাবাহিক উন্নয়নের স্বার্থেই নৌকার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটির এই নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দলের হাইকমান্ড। এজন্য শুরুতেই কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সমন্বয় টিম গঠন করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে সমন্বয় করে টিম বণ্টন করে দিয়েছেন। নেতারা প্রতিদিনই নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় থেকে সার্বিক পরিস্থিতি অবহিত করেছেন। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে জয় হোক পরাজয় হোক নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সার্বিক পরিস্থিতি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হবে। এজন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করবেন, যা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে হস্তান্তর করা হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, একটি মাল্টিক্লাস পার্টি হিসেবে আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। না থাকাটাই অস্বাভাবিক। নারায়ণগঞ্জেও হয়তো কারো কারো মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু আমরা আজকের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বলতে পারি, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে কোনো বিভেদ নেই। তিনি বলেন, এই নির্বাচনটিকে নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে মানুষকে ভোটকেন্দ্র বিমুখ করার অপচেষ্টা রয়েছে। আমি ভোটার ভাই-বোনদের কাছে অনুরোধ করবো আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসুন, নির্বিঘ্নে ভোট দিন, যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভীর নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল শনিবারও নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করছেন। এর আগে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেনসহ ২৭টি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারাও আজকের শেষ গণসংযোগে অংশ নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, নাসিক জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সিটি করপোরেশনে এবার মেয়র পদে লড়ছেন ৭ জন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ (হাত পাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোহাম্মদ রাশেদ ফেরদৌস (হাত ঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি) ও কামরুল ইসলাম বাবু (ঘোড়া)। তবে আইভী আর তৈমূরের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এছাড়া ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন ১৪৮ জন। সংরক্ষিত ৯ ওয়ার্ডে ৩৪ জন নারী প্রার্থীসহ সব মিলে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৮২ জন। সরজমিনে জানা গেছে, ইসির বিধিনিষেধ থাকায় গতকাল শনিবার দিনভর কোনো প্রচার-প্রচারণা ছিল না। তবে নাসিকের পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি ও চায়ের দোকানে আলোচনা একটাই। শামীম উসমান আইভীর পাশে দাড়িয়েছে, নৌকার বিজয় ঠেকাবে কার সাধ্য আছে? তাছাড়া আইভী তো চুনকার মেয়ে, নারায়ণগঞ্জবাসী আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে তার বিজয় নিশ্চিত করবে।

এলাকাবাসী বলছেন, রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ সার্বিক উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, ভোট নৌকাতেই দিতে হবে। গতকাল শনিবার এসব কথা বলেছেন, শিমরাইল এলাকার নাজমুল হোসেন, মুক্তিনগর এলাকার ইমাম হাসানসহ কয়েকজন। তারা বলছেন, সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নৌকা যার, ভোটও তার। সেক্ষেত্রে প্রতীক হিসেবে অনেকেই এগিয়ে রাখতে চান আইভীকে। এছাড়াও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের তুলনায় নানা কারণে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ব্যক্তি আইভীই দলমত নির্বিশেষে ভোট পাবেন। তাই নির্বাচনী সমীকরণে তিনি অন্যদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন। গত কয়েকদিনের প্রচারণায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার তার সমর্থকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তবে বরাবরই নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। আধুনিক নগরীর প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতি প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, এই সিটি করপোরেশনকে আমরা গণমুখী করব। এই নগরী হবে একটা নিরাপদ নগরী। গড়ে তোলা হবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। এটি হবে একটি আধুনিক নগরী, যেখানে সব ধরনের সেবা ও সুযোগ-সুবিধা থাকবে। অসম্প্রদায়িক নগরী হিসেবে নারায়ণগঞ্জকে গড়ে তোলা হবে। নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাচ্ছি। সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে মন জয় করে ভোট আনা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সেই চ্যালেঞ্জে জিতব বলে আশা করি। সারাদেশ জানে, আমি অর্থনৈতিকভাবে গরিব। খুবই সাধারণ জীবনযাপন করি। এই বিষয়টি আমার শত্রুপক্ষও যেমন জানে, তেমনই আমার কাকা তৈমূর আলম খন্দকারও জানেন। আমি জীবনে কখনোই টাকার রাজনীতি করিনি এবং ভবিষ্যতেও করব না। এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে আদালাভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই, সবগুলো কেন্দ্রকেই বিশেষ বিবেচনায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯২টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে একজন এসআইয়ের নেতৃতে থাকবেন পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য। এছাড়াও আটজন পুরুষ ও চারজন নারী আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। পুলিশের ২৭টি ইউনিট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। এছাড়াও পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ৬৪টি, প্রতি টিমে সদস্য থাকবেন পাঁচজন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১৪ প্লাটুন সদস্য থাকবে। আরো অতিরিক্ত ৬ প্লাটুনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক চাহিদা পাঠিয়েছেন বলেও জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নাসিক নির্বাচনে র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ৩টি, চেকপোস্ট থাকবে ৬টি, টহল টিম থাকবে ৭টি ও স্ট্যাটিক টিম থাকবে ২টি।


© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developer: Tanveer Hossain Munna, Email : tanveerhmunna@gmail.com