সংবাদ শিরোনামঃ
লক্ষ্মীপুরে সরকারি ঔষধ ফার্মেসিতে! এযেন সর্ষের মধ্যে “ভুত “ লক্ষ্মীপুরে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত অবশেষে লক্ষ্মীপুরে বাল্য বিবাহ রোধে অগ্রনী ভূমিকা রাখলেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জোবায়েদা খানম শিমুল সাহা, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত লক্ষ্মীপুরে গ্রামীন সড়কে ড্রামট্রাকে  মেম্বারের বালু ব্যবসা, জানতে চাইলে সাংবাদিকদের চাঁদাবাজি মামলা দেয়ার হুমকি রায়পুরে কিশোরী অপহরণ মামলায় দীপেন ও জহির গ্রেপ্তার  লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সড়কের পাশে আবর্জনার স্তূপ, নির্গত দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ লক্ষ্মীপুরে শিক্ষক- শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়নে স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষিকার অনৈতিক সম্পর্ক, শিক্ষিকার স্বামীর অভিযোগ লক্ষ্মীপুর ২ আসনের মানবিক এমপি নুরউদ্দিন আলিফ মীম হাসপাতালের শেয়ার হোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি জেলা বিএমএ ও স্বাচিপের সভাপতি ডা: জাকির হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ না নিতে এমপি আনোয়ার খাঁনকে চিঠি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এডভোকেট রহমত উল্যাহ বিপ্লবের কিছু কথা লক্ষ্মীপুরের কৃতিসন্তান আনোয়ারুল হক ছলেমা খাতুন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কামাল ফার্মারের  জন্মদিনে তিনি সকলের আশির্বাদ /দোয়া প্রার্থী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদি ইউপি নির্বাচনে মীর শাহআলম চেয়ারম্যান নির্বাচিত
আগামী দিনের সোনার বাংলার সোনার খনি আহ্সান উল্লাহ্

আগামী দিনের সোনার বাংলার সোনার খনি আহ্সান উল্লাহ্

ভিবি নিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশ একদিকে মহামারী করোনার প্রকোপে ভয়ে আতঙ্কে হতাশায় নিমজ্জিত এবং অপরদিকে হেফাজতের তা-বে বিব্রত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তখন দেশের সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিটিউটের বিজ্ঞানীরা জাতিকে এক বিশাল আশার বাণী শুনিয়েছেন। তারা যে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন তা বাংলাদেশের সামনে আকাশচুম্বী সীমাহীন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের ইঙ্গিত দিয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এবং ৩ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি। বাংলাদেশের সামনে আজ উঁকি দিচ্ছে এক মহাসম্ভাবনাময় সোনার বাংলা। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ক্ষুদ্র এ দেশে ১৭ কোটি জনসংখ্যার ভারে অবনত। তার উপর আছে পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারের নির্মম ও অমানবিক আচরণের ফলে দু’বছর আগে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগেও ১০ লাখের উপর রোহিঙ্গাকে মায়ানমার থেকে বিতাড়িত করা হয়। এভাবে ২০ লাখের উপর রোহিঙ্গা উদ্ধাস্তু বাংলাদেশে আগমন করে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। এ জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ ও বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এ বিরাট উদ্বাস্তু জনসংখ্যা বাংলাদেশের জন্য বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যে সব এলাকায় তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা- সংঘটিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে ভাসানচরে স্থানান্তর এবং সেখানে বসবাসের সুন্দর ব্যবস্থা করেছে। মায়ানমার তাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে অনীহা এবং নানারকম টালবাহানা করেই চলেছে। বাংলাদেশকে এ সব অনিবার্য সমস্যাকে মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কাজে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছে না।

শেখ হাসিনা সরকার সমুদ্র সীমানা নির্ধারণের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয়ে ভারত এবং মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চিহ্নিত করে নিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে অন্য কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির অবকাশ নেই। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অধীনে রয়েছে ২০০ নটিক্যাল মাইলের বিস্তীর্ণ সমুদ্র অঞ্চল। এই সমুদ্রে একদিকে বিপুল খনিজ সম্পদ এবং অপরদিকে মাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ‘সি ফুড’ বা সামুদ্রিক আহার্য বস্তু রয়েছে। একটি দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে তার সামুদ্রিক এলাকা বহুভাবে সহায়তা করতে পারে। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জন্য রয়েছে এক স্বর্ণ খনির ন্যায় মূল্যবান বহু ধরনের খনিজ সম্পদ।

অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা চমকপ্রদ ফলাফল প্রকাশ করেছেন। বঙ্গোপসাগরের তলদেশে ৩ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে মোজানাইট, টাইটানিয়াম, আয়রন, জিরকন, রুটাইল, ক্যালশিয়াম, কার্বনেট, ফসফরাস, সালফেট ও রেয়ার আর্থ এলিমেন্টসহ মূল্যবান খনিজ পদার্থ। এছাড়া বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা সম্ভাব্য আরো একশ’ ট্রিলিয়ন গ্যাস হাইড্রেটের মজুদের সন্ধান পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এ মজুদ গ্যাস দিয়ে বাংলাদেশের একশ’ বছরের চাহিদা মেটানো যাবে।

গত ১ এপ্রিল দৈনিক জনতায় প্রকাশিত এক রিপোর্টে গত ২৮ মার্চ কক্সবাজারে পেঁচার দ্বীপে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ‘সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে সমুদ্র সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। বঙ্গোপসাগরের তলদেশে থাকা বিরল খনিজ সম্পদের ভূতাত্তি্বক জরিপের ফলাফল তুলে ধরে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভূতাত্তি্বক ওশানোগ্রাফি বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, আমাদের সাগরের তলদেশে গ্যাসের যে সম্ভাব্য মজুদ পাওয়া গেছে তা দিয়ে আমরা বাংলাদেশের ১শ’ বছরের চাহিদা মিটাতে পারব। বর্তমানে দেশের ভূগর্ভে মাত্র ১৪ বছরের গ্যাস মজুদ রয়েছে। ওই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে যে বিরল খনিজ পদার্থ রয়েছে তার মধ্যে পারমাণবিক চুলি্লর জ্বালানি ও নিরাপত্তা কাজে ব্যবহৃত খনিজ পদার্থও রয়েছে। এসব খনিজ সম্পদ উত্তোলন করে আমরা বস্নু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করতে পারব।

অপর বিজ্ঞানী ড. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, সমুদ্রে প্রায় ২শ’ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল। অথচ গড়ে ৩০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত আমরা ব্যবহার করতে পারছি। গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা না থাকায় আমাদের জেলেরা উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে। এ দেশের জেলেরাও যাতে গভীর সাগর থেকে মাছ ধরে আনতে পারে সে জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে কয়েকজন জেলেকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে।

ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ, প্রগতিশীল, আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে বঙ্গোপসাগরের সম্পদ একটি বিশাল ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি। সাগরের তলদেশের সম্পদ, সে সাথে পানির মাছ উদ্ভিদ প্রভৃতি সম্পদও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে। বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি স্বর্ণখনি হয়ে দাঁড়াবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সাগরের খনিজ ও অন্যান্য সম্পদ আহরণের মাধ্যমে বস্নু-ইকনোমির সিংহ দরজা খোলার প্রস্তুতি বা পরিকল্পনা এখন থেকেই শুরু করা উচিত। এর জন্য বড় ধরনের প্রস্তুতি অর্থাৎ সম্পদ আহরণের মূল্যবান সরঞ্জাম সংগ্রহ সময় সাপেক্ষ এবং প্রচুর অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে এখন থেকেই পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।

প্রসঙ্গক্রমে আরো একটি আশার কথা এখানে এসে পড়ে। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের দক্ষিণে একটি বিশাল ভূখ- জেগে উঠছে। যা বাংলাদেশের ভূখ-ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেবে এবং বিশাল জনসংখ্যার বসতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনুকূল ভূমিকা পালন করবে।


© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developer: Tanveer Hossain Munna, Email : tanveerhmunna@gmail.com