বিশেষ প্রতিনিধি-লক্ষ্মীপুরে কাল বৈশাখী ঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছে বিদ্যুৎ গ্রাহকগণ।
গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে ঝড়ো বাতাস শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। আজ শনিবার ২৫ এপ্রিল বিকেল ৪ টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলার পৌর এলাকাসহ বিভিন্নস্থান ছিলো বিদ্যুৎহীন।
লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি)। আর পুরো জেলার বেশিরভাগ অংশে রয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবারের কালবৈশাখী ঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইনে গাছ পড়ে বিভিন্ন স্থানে লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া কোথায় কোথায়ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে যায়। কয়েকটি স্থানে বিধ্বস্ত লাইন মেরামত করে শনিবার সকালেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তবে জেলার বেশিরভাগ এলাকা, লক্ষ্মীপুরের উপশহর দালাল বাজার, পশ্চিম লক্ষ্মীপুর, নন্দনপুর সহ জেলার পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে জেলার বাসিন্দারা।
কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যুতের মূল সঞ্চালন লাইনসহ অাভ্যন্তরীণ লাইনে সমস্যা থাকায় লাইন চালু করা যাচ্ছে না। বিধ্বস্ত লাইন মেরামতে কাজ করে যাচ্ছে তাদের কর্মীরা।
কয়েকজন বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী জানান, টানা দীর্ঘ সময় প্রায় ২৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। বিশেষ করে ফ্রিজে থাকা মাছ মাংস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে না পারায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রথম রমজানের সেহরীর সময়ও ভোগান্তিতে পড়ে তারা। এছাড়া তীব্র পানির সংকটে পড়েছে বাসাবাড়িতে বহুতল ভবনে বসবাসরত বাসিন্দারা। ফলে রমজানে ইফতার তৈরীসহ রান্নার কাজে বিঘ্নিত ঘটছে। বেশিরভাগ গ্রহকদেরই অভিযোগ, একটু বাতাস এলেই পল্লি বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়, তাই তাদের পরামর্শ উপশহর কেন্দ্রীক বিদ্যুৎ লাইন গুলো মাটির নিচ দিয়ে করা যায় কিনা। বিষয়টি লক্ষ্মীপুর পল্লি বিদ্যুৎ এর জিএম মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আবু তাহের বলেন, বিধ্বস্ত লাইন মেরামতে কাজ করা হচ্ছে। সে সব এলাকায় লাইন মেরামত করা হয়েছে, ওই সকল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদান করা হয়েছে। আমি গতরাত থেকে এখনো দুচোখ বন্ধ করতে পারি নি, গ্রাহকরা শুধু আমাকে ফোন দেয়, আমি যেন ইমারজেন্সি বাটন। কাজ করছি, বিদ্যুৎ সকলের জন্য নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে।
বিপিডিবির লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল ফাত্তাহ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ভিবিনিউজ কে বলেন, ঝড়ে জেলার বিদ্যুৎ সঞ্চালনকৃত প্রধান লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া অাভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক লাইনেও বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে এবং একাধিক ট্রান্সফরমারে কারিগরী ত্রুটিও দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, গতকাল (শুক্রবার) থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আমাদের কর্মীরা বিধ্বস্ত লাইন এবং মূল সঞ্চালন লাইন মেরামতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে । তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদানে দেরী হচ্ছে। এছাড়া, অন্য একটি সোর্স থেকে শনিবার সকালে কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদান করা হয়েছে।