সরজমিন ঘুরে এসে আমাদের এপ্রতিবেদক জানান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাউবো চলমান খালের মধ্যে অবৈধভাবে কিছু পাকা পিলার তুলে দোকানঘর নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা।প্রশাসনের নাকের ডগায় কি ভাবে প্রকাশ্যে এসব অবৈধ স্থাপনা উঠে, বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এবং স্থানীয় সচেতন লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
যেই খাল গুলোকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার কৃষি জমি গুলোতে পানি সেঁচের বন্দোবস্ত করা, ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি টেনে নিয়ে জলাবদ্ধতা প্রতিহত করা,বসতবাড়ির যাবতীয় পানি নিস্কাশন বা পয়ঃনিস্কাশন কল্পে সহায়ক ভূমিকা রাখা,ঠিক সেই খাল-ই আজ ভূমিদস্যুদের কবলে পড়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করে দেদারসে যে যার মতো করে নির্মান করছেন বহুতল ভবন সহ বিভিন্ন ছোট বড় স্থাপনা। আর বিপাকে পড়ছে উপজেলার কৃষি কাজে জড়িত কয়েক হাজার কৃষক পরিবারসহ এলাকার জণগোষ্ঠি।
আরো দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১নং উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন, যাহা কাজীর দীঘির পাড় বাজার সংলগ্ন পূর্ব পাশে, বেড়ী বাজার, কালী বাজার , ২নং দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের নন্দনপুর, পশ্চিম লক্ষ্মীপুরের তেমুহনী, বেড়ীরমাথা, কামালখোলা,ইছাখাঁগো তেমুহানী, ৪নং চররুহিতা ইউনিয়নের দাসপাড়া, রসুলগঞ্জ,নতুন বেড়ীবাঁধ, ৫নং পার্বতী নগর ইউনিয়ন সহ চাঁদপুর সেঁচ প্রকল্প ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আরও অন্যান্য খাল গুলোর অধিকাংশ জায়গায় নিচ থেকে গ্রেটভীমের সাহায্যে ওয়াল উঠিয়ে মাটি ভরাট করে তৈরি হচ্ছে দোকানপাটসহ নিজস্ব ভূ-সম্পত্তি। এযেন এক মহা সামরাজ্য !
কোথাও ৪০ ফুট,কোথাও ৩০ ফুট প্রসস্থ থাকার খাল গুলো এখন দখলের উৎসবে নেমে এসেছে তার অর্ধেকাংশে। খালের মধ্যখান দিয়ে বাঁধ দিয়ে কোথাও মাছ চাষ ও বাড়ির রাস্তা নির্মাণ করেও নিয়েছেন অনেক প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা। এই অনৈতিকতার সম্পর্কে তাদের নানান অজুহাতেরও অন্ত নেই।
চাঁদপুর সেঁচ প্রকল্প ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)এর অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার একাংশ পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ডে বেড়ীর খালে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছেন স্থানীয় লাতু মিয়া পিতা মজিবুল হক, শফিকুর রহমান, মাসুদ পিতা:ডাঃ আবুল কালাম সহ ৪/৫জন দখলদার। অন্যদিকে ৪নং চররুহিতা নতুন বেড়ীবাঁধ উত্তর পাশে খালে উপর বাণিজ্যক ভবন নির্মাণ করছেন বাবু, জসিম,পিতা নুরুজ্জামান, কাশেম পিতা অনু মিয়া সহ ৪/৫ জন প্রভাবশালী মহল।
তবে ওই জায়গার তাদের নামে কোনো কাগজ বা রেকর্ড কিছুই দেখাতে পারেননি স্থাপনা নির্মাণকারী শফিকুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর একটি আবেদন করা হয়েছে তারা মৌখিক ভাবে অনুমতি দিয়েছে কিন্তু কাগজিক কোন কিছু এখনো পায়নি। প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, যারা পাউবো জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় এজহার করেছি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার লক্ষ্মীপুর সদর কে অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি অনুলিপি দেওয়া হয়েছে যার স্বারক নং উ.স.প্র/রায়/শা-১/২০২১/১১৫/। এছাড়াও শীগ্রই লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর মডেল থানা এস.আই আবুল বাশার খন্দকার বলেন, চাঁদপুর সেঁচ প্রকল্প ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) শাখা-১(সদর) কর্মকর্তার এজহারের ভিত্তিতে সরোজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।