ভিবি নিউজ ডেস্কঃ
ধর্ষকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি পুলিশের”।
পুলিশের উদ্যোগে রাজধানীসহ সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সারাদেশে ৬ হাজারেরও বেশি সমাবেশ হয়েছে। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে পুলিশের মোট ৬৪৭টি থানা রয়েছে।এই থানাগুলোতে পুলিশের মোট বিট ৬ হাজার ৯১২টি। পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, সব বিটেই গতকাল শনিবার ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠিত
সমাবেশগুলোতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে নানা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ অনেকেই অংশ নেন। এসব সমাবেশ থেকে ভুক্তভোগীদের নির্ভয়ে থানায় অভিযোগ করা আহ্বান জানানো হয়। সাধারণ মানুষ যেন ধর্ষকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পুলিশকে ধর্ষণ প্রতিরোধে সহায়তা করেন, সে আহ্বানও জানানো হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান, আমরা সারাদেশে এই সমাবেশের আয়োজন করেছি একটি বার্তা দিতে, তা হলো ধর্ষণ করে রেহাই পাওয়া যাবে না। ধর্ষককে শাস্তির আওতায় আসতেই হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ঢাকা শাহবাগ থানার সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সাজ্জাদুর রহমান আরো বলেন, ধর্ষণ এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতন হচ্ছে। আমরা ধর্ষণের শিকার নারীদের পাশে আাছি। আমাদের কথা হলো কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হবে না। আর কোনো মায়ের সন্তান যেন ধর্ষক না হয়। এই সমাবেশে অংশ নেয়া রেহানা পারভীন বলেন, ধর্ষণের শিকার যারা হন তারা ঠিকমতো পুলিশের সহযোগিতা পান না। সহযোগিতা পেলে ধর্ষণ কমবে।
তার মতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ-ের বিধান করায় এখন ধর্ষকরা ভয় পাবে। ফলে ধর্ষণ কমে আসবে। তবে মানুষের মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সমাজের পুরুষদের উদ্দেশে বলেন, আমরা তো আপনাদেরই মা-বোন-স্বজন্ আপনারা যদি আমাদের পাশে থাকেন তাহলে ধর্ষকরা আর অপরাধ করতে সাহস পাবে না।
সমাবেশে উপস্থিত খায়রুল আলম বলেন, আমাদের নারীদের প্রতি সহনশীল হতে হবে। তাদের শুভাকাঙ্খী হিসেবে পাশে থাকতে হবে।তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। এ সমাজে তাদেরও সমান অধিকার এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
এদিকে, পুলিশের দাবি ধর্ষণ বাড়েনি বরং আগের থেকে সংবাদমাধ্যমে এর প্রচার বেশি হচ্ছে। ডিএমপির রমনা জোনের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সংবাদ মাধ্যমে কখনো ছেলেধরা, কখনো গণপিটুনির রিপোর্ট বেশি হয়। ধর্ষণের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমে যখন আলোচনা হয় তখনই আমরা সক্রিয় হই এই অভিযোগও ঠিক নয়, আমরা সব সময় সক্রিয় আছি। ধর্ষণ মামলায় তাহলে শাস্তির হার এত কম (শতকরা ৩-৪ ভাগ) কেন? তদন্তে ত্রুটি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের তদন্তে ত্রুটি আছে বলে মনে হয় না। শাস্তি আদালতের বিষয় । কেন হয় না আদালতই বলতে পারবেন?
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের থানা এলাকায়ও ধর্ষণবিরোধী সমাবেশ হয়েছে পুলিশের উদ্যোগে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উপশহর দালাল বাজার পুলিশ কেম্পে নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন বিরোধী বিট পুলিশিং সমাবেশ লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মংনেথোয়াই মারমা মহোদয়ের সভাপতিত্বে এবং কেম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক পুলেন বড়ুয়া সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন এলাকার চেয়ারম্যান কামারুজ্জামান সোহেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান, জনপ্রতিনিধি হিরন ম্যাম্বার, আইনজীবী নজরুল ইসলাম সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।