ভিবি নিউজ ডেস্ক ঃ – লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৪ নং চররুহিতা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আলী দরবেশ এর বাড়ীর সৌদি প্রবাসী আব্দুস সাত্তারের এর স্ত্রী সাবিনা আক্তার হ্যাপি নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে সাবিনার মায়ের অভিযোগ।
ঘটনার ২৫ দিন পরেও উদ্ধার হয়নি এই গৃহবধূ।
প্রবাসী আবদুস সাত্তারের মা শামসুন্নাহার সাংবাদিক সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ২০১৬ সালের আগস্ট মাসের ২৬ তারিখে, ৬ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তার ছেলে আব্দুস সাত্তার। বড় শখ করে বিয়ের দিনে দশ ভরি স্বর্ণালংকার দিয়ে নববধূকে ঘরে তুলে নেন।
স্ত্রীর আচার-আচরণ অনেক সুন্দর দেখে তারা তাদের ব্যাংক একাউন্ট পর্যন্ত নববধূ সাবিনা আক্তার হ্যাপির নামে করেন। বিয়ের চার মাস পরেই আব্দুস সাত্তার জীবিকা নির্বাহের তাগিদে প্রবাসে পাড়ি জমান। এরই ফাঁকে তার অন্যান্য ছেলেরা ও প্রবাসে টাকাপয়সা যা পাঠিয়েছে সবগুলো পুত্রবধূর একাউন্টে জমা রাখতো।তাদের টাকা পয়সা দেখে সাবিনা আক্তার হ্যাপির পিতা কুয়েত যাওয়ার কথা বলে মেয়ের একাউন্ট থেকে ছয় লক্ষ টাকা ধার নিয়েছেন।
স্ত্রীর ভালো আচরণ ও শ্বশুর-শাশুড়ির যত্ন দেখে সকলে তাকে বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে জানতো।শামসুন্নাহার ও কিছু স্বর্ণ অলংকার জমা রাখেন সাবিনা আক্তার হ্যাপির কাছে।তাদের বাড়ির জায়গা জমিনের কাগজ পত্র ও অন্যান্য জরুরী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তার কাছে জমা রেখেছিল।
অন্যদিকে সুন্দরি বধুর কথা শুনে সকল টাকা-পয়সা সাবিনা আক্তার হ্যাপির
অ্যাকাউন্টে পাঠাতো।সুন্দরী বধু সাবিনা আক্তার হ্যাপির কথায় ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ১০ লক্ষ টাকার একটি বীমা করেন।
প্রবাসী আবদুস সাত্তারের পিতা সেকান্তর মিয়া অঝোরে চোখের পানি ফেলে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা সাবিনা আক্তার হ্যাপি কে নিজের মেয়ের চেয়েও বেশি ভেবেছিলাম।সে যে আমাদের সাথে এত বড় প্রতারণা করবে যা আমরা কল্পনাও করি নাই।তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বমোট স্বর্ণ অলংকার ও নগদ টাকাসহ ৩১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা স্টেটমেন্ট তুলে ধরেন।সম্পূর্ণ স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকার হিসাব রয়েছে তাদের হাতে।
গণমাধ্যমকর্মীরা সাবিনা আক্তার হ্যাপি দের বাড়ি রায়পুর উপজেলার ৭ নং বামনি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড জবেদ আলী হাজী বাড়ি ওরফে সৈয়াল বাড়িতে গেলে সাবিনাকে খুঁজে না পেয়ে তার মা রাশিদা খাতুন এর সাথে কথা বল্লে তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে কোথায় গেছে তিনি জানেন না।গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন নিখোঁজের ব্যপারে থানায় ডায়রি করা হয় নি। তিনি আরো বলেন থানায় গিয়েছি অথচ আমাদের কোন অভিযোগ রায়পুর থানা পুলিশ নেয়নি। তাৎক্ষণিক গণমাধ্যমকর্মীরা থানায় ফোন দিলে রায়পুর থানার ওসি বলেন,এ ধরনের কোনো কিছু নিয়ে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগের জন্য আসেননি, আসলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এই বিষয়ে সাবিনা আক্তার হ্যাপির বাড়ির ও আশেপাশের কয়েকজন প্রতিবেশীরা বলেন, সাবিনার মা রাশিদা আক্তার তাকে লুকিয়ে কোথাও রেখেছে।প্রতিবেশীরা আরো বলেন, আমাদের কোন মেয়ে হারানো গেলে আমরা কান্নাকাটি কিংবা বিমর্ষ অবস্থায় থাকতাম কিন্তু তাদের মধ্যে এই ধরনের কোন কিছু আমরা আজও দেখি নাই।প্রতিবেশীরা বলেন, আমরা সাবিনার মার চলাফেরা কথাবার্তা থেকে বুঝে নিয়েছি যে তার মেয়ের তার আশ্রয় আছে।
এদিকে সাবিনা আক্তারের প্রবাসী স্বামী আব্দুস সাত্তার মুঠোফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সাবিনা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে। আমার অর্জিত যত সম্পত্তি আছে সবকিছু নিয়ে গেছে।আমি বিচার চাই।আমি তাকে বিশ্বাস করা কি আমার অপরাধ ছিল? এভাবে আমার স্বর্ণালংকার ও ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তুলে নিয়ে আমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন,যে ব্যক্তি সাবিনা আক্তার হ্যাপি কে খুঁজে দিতে পারবে আমি তাকে পুরস্কৃত করব।কোন ব্যক্তি খুঁজে পেলে এই ০১৭৭৯৩৮৯৮৯৭ অথবা ০১৭১৯৩৮৫০৭৮ নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য বলেছেন । তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।