ভি বি রায় চৌধুরী
ধূপের ঘ্রাণ, ঢাকের বাদ্য আর উলুধ্বনিতে মুখরিত ম-প। সন্ধ্যা হতে না হতেই ভিড় বাড়ছে দেবী দুর্গাকে ঘিরে। গতকাল রোববার ছিল মহানবমী, সমস্ত দিন ম-পে ঘুরে ঘুরে দেবীকে এদিন প্রাণ ভরে দেখছেন ভক্তরা। কারণ আজ সোমবার ভক্তদের কাঁদিয়ে কৈলাশে ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা।
গতকাল রোববার নবমী পূজার মধ্য দিয়ে বাজছে দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর। সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় মহানবমীর আনুষ্ঠানিকতা। এ দিনই দুর্গাপূজার অন্তিম দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কারণ আজ সোমবার কেবল বিসর্জনের পর্ব। ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হয়েছেন দেবিদুর্গা। পূজা শেষে যথারীতি ছিল পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ। সন্ধ্যায় ছিল ভোগ আরতি। এবার দেবী এসেছিলেন দোলায় চড়ে এবং ফিরবেন গজে চড়ে। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর কামান খোলা জমিদার বাড়ি মন্দিরের পুরোহিত নিবাশ চক্রবর্তী বলেন, আমরা যেন একটি সুন্দর প্রভাতে আবার সবাই একত্রিত হতে পারি, আমরা মায়ের কাছে সেই প্রার্থনাই করেছি। বিভীষিকাময় করোনার হাত থেকে রক্ষা এবং আমরা যেন আবার সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারি, প্রার্থনায় জানিয়েছি সেটিও। তিনি বলেন, যেহেতু এবার মা দোলায় চড়ে এসেছেন ফল কিঞ্চিত পরিমাণে অশুভের আশঙ্কা ছিল। তবে আমরা মায়ের চরণে বহু ধরনের ভেষজ দ্রব্য অর্পণ করে মায়ের কাছে প্রার্থনা করেছি, যুগে যুগে যেভাবে অশুভ শক্তির বিনাশ করেছ, এবারও সেভাবে অশুভ শক্তির বিনাশ করে সবাইকে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ দিও। আর যেহেতু মা এবার গজে চড়ে যাবেন, সেহেতু দোলায় এসে যেমন একটু দুঃখ দিয়েছে, তেমনি যাবার সময় সবকিছু সুজলা সুফলাভাবে ভরিয়া দিয়ে যাবে।
এই বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি ও কামান খোলা জমিদার বাড়ির উত্তর সূরী ভাস্কর বসু রায় চৌধুরী বলেন
নবমীর রাতে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাতে তাই মন্ডপে – মন্ডপে বিদায়ের ঘণ্টা বাজে। করোনা মহামারীর কারণে সংক্রমণ এড়াতে এ বছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। তবে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে আগামী বছর আবার নতুন উৎসবে যোগ দেবে মায়ের ভক্তরা, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।