ভিবি নিউজ ডেস্ক: ১৭ জুন ২০২১ ইং জামাই ষষ্ঠী অনুষ্ঠান লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের আঙ্গার পাড়ায় স্বর্গীয় ভুবনেশ্বর পাটোয়ারির জেষ্ঠ কন্যা কাজল মজুমদারের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। জামাই ষষ্ঠী অনুষ্ঠানে এলাকার আত্মীয় সজন পাড়াপড়শিদের নিমন্ত্রণ করা হয় এবং শাশুড়ি মাতা হরেক রকম নানান ব্যাঞ্জনে খাওয়ার আয়োজন করেন। এতে ছিলো তিন রকমের মাছ, তিন রকমের মাংশ, মিষ্টি, দধী সহ আরো কতোকি।
আরো জানা যায় এই দিনে জামাইবাবাজীকে খুশি রাখতে কত রকমের উপায় খুঁজেন বাঙালি মায়েরা। খুঁজে খুঁজে পেয়ে যান ‘জামাইষষ্ঠী’ ব্রতপূজা্র বিধান। বছরের একটি দিন, জৈষ্ঠ্যের মাঝামাঝি, যখন আম- কাঁঠালের পাকা গন্ধে চারদিক সুবাসিত, তখনই এই ব্রতটি উদযাপণ করতে হয়। শ্বশুরবাড়ীমতে ‘জামাই আদরের’ ঘটা পড়ে যায়। ‘জামাইষষ্ঠী’ ব্রতপূজার যা কিছু, সবই কন্যার শিবঠাকুর স্বামীটিকে ঘিরে আবর্তিত হয়ে থাকে। জামাই ষষ্ঠী এমনই এক ব্রত, যেখানে শাশুড়ীমাতা কন্যা-জামাতার দীর্ঘায়ু কামনা করেন, জামাতার যশ কামনা করেন, জামাতার জন্য অর্থ-বিত্ত কামনা করেন, কন্যা- জামাতার কোল ভরে সুস্থ সন্তান কামনা করেন, এমনই আরও কত ধরণের মঙ্গলাকাংক্ষা করে থাকেন! তবে শুকনো কথায় ‘মংগলাকাংক্ষা’ করলে কী জামাই বাবাজীর পেট ভরবে? মায়েরা অমন অবুঝও নন, উনারা জামাইবাবাজীকে যথাযথ সম্মান সহকারে, উপঢৌকন পাঠিয়ে শ্বশুরবাড়ী আসার জন্য নিমন্ত্রণ করেন।
শাশুড়ীমায়ের নিমন্ত্রণ রক্ষার্থে জামাই বাবাজী শ্বশুড়বাড়ীতে পা দেয়ার সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় জামাই অভ্যর্থণার সকল আচার-অনুষ্ঠান। পথশ্রান্ত জামাতাকে বসবার জন্য নানা রঙ-বেরঙের নক্সাখচিত সবচেয়ে সুন্দর আসনখানি মাটিতে বিছিয়ে দেন, হাতপাখা্র শীতল বাতাসে বাবাজীর ঘামে ভেজা শরীরটিকে ঠান্ডা করেন, যত্নে তুলে রাখা শ্বেত পাথরের গেলাস ভরে ডাবের ঠান্ডা জল পান করতে দেন। এরপর ষষ্ঠীদেবীর আশীর্বাদপূর্ণ দূর্বা-বাঁশের কড়ুল, ধান, ফুল, করমচা দিয়ে বাঁধা ‘মুঠা’ জামাইবাবাজীর মাথায় ছুঁইয়ে ‘ষাট ষাট, বালাই ষাট’ করে স্নেহাশীর্বাদ করেন।
পরিশেষে জামাইভোজের জন্য বিশাল আয়োজন করা হয়। পুকুরে জাল ফেলে সবচেয়ে বড় কাতলা মাছ তোলান, মাছের আস্ত মুড়ো জামাই বাবাজীর পাতে তুলে দেন। ষোড়শ ব্যাঞ্জনে জামাইথালা সাজান, বড় জামবাটিতে কালো গাইয়ের ঘন ক্ষীরদুধ, গাছপাকা আম, কাঁঠাল, কলা তো থাকেই। ভোজনশেষে ডালা সাজিয়ে শাশুড়ীমাতা জামাইবাবাজীকে আশীর্বাদ করেন, নিজ কন্যাটিকে সুখে রেখেছেন বলে ‘শিবঠাকুর’ বাবাজীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং কন্যা-জামাতার ভবিষ্যত জীবন আরও সুখের, আরও শান্তির, আরও সমৃদ্ধির হোক, সেই কামনা করেন