সংবাদ শিরোনামঃ
দেশব্যাপি বাড়ছে সামাজিক অপরাধ, দরকার জরুরি পদক্ষেপ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অধঃস্তন পুলিশ কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষায় পুলিশ সুপার মোঃ আক্তার হোসেন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প: সৌজন্যে আলিফ মীম হাসপাতাল লক্ষ্মীপুরে নবাগত পুলিশ সুপার আক্তার হোসেনের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় লক্ষ্মীপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলামের আগমনে জেলাপ্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের শুভেচ্ছা কমলনগর উপজেলা আ’ লীগের সভাপতি মোঃ নিজাম উদ্দিনের সুস্থতায় কমল নগরের মানুষের মাঝে আনন্দ অশ্রু বৃহত্তর নোয়াখালী আন্ত:স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা -২০২৩ লক্ষ্মীপুর কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত ফুটপাত দখলমুক্ত করা প্রয়োজন ঔষধ কোম্পানি গুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ ফেরত নিতে গড়িমসি করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভোক্তারা লক্ষ্মীপুরে অস্ত্র -গুলি সহ যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার, লক্ষ্মীপুর -৩ সদর আসনের নির্বাচনে অনিয়ম রোধে অনুসন্ধান কমিটি লক্ষ্মীপুরের কৃতি সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড,মাকসুদ কামালকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান দুস্থ মানবতার সেবায় এগিয়ে আসা “সমিতি ওমান ” কর্তৃক চট্টগ্রামে ইফতার সামগ্রী বিতরণ
অবহেলিত নির্যাতিত মফস্বল সাংবাদিকরা তাদের ন্যার্য্য অধিকার আদৌ পাবেন কি

অবহেলিত নির্যাতিত মফস্বল সাংবাদিকরা তাদের ন্যার্য্য অধিকার আদৌ পাবেন কি

  • ভি বি রায় চৌধুরী-আমি সাংবাদিক, অভাগা সাংবাদিক। এই পেশাকে মমত্ত্ব দিয়ে ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি। নুন্যতম হলেও নীতি-নৈতিকতা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলাদেশকে ডিজিটাল এবং মধ্যম-আয়ের দেশে রূপান্তরের যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে তাতে রাষ্ট এবং রাষ্ট্রের জনগণের পাশাপাশি মফস্বল সাংবাদিক বা সংবাদকর্মীদের অবদান কম নয়। ডাক-ঢোল পিটিয়ে বিষয়টি প্রচার না করায় ব্যাপারটি হয়তো অনেকের অগোচরে রয়ে গেছে। একটু মনোযোগ দিলে আমরা বুঝতে পারবো মফস্বল সাংবাদিকরা নিজ নিজ এলাকার অবহেলিত, অনুন্নত, উন্নয়ন-বঞ্চিত জনপদের মুখপাত্রের ভূমিকায় কাজ করছেন।

প্রান্তিক জনপদের খবর লিখতে গিয়ে অনেক সময় সুবিধাবাদী-স্বার্থান্ধ রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, আমলার মিথ্যে মামলা আর নির্বিচার হামলার শিকার হন মফস্বল সাংবাদিকরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা পথ চলেন এবং অবহেলিত প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণের জন্য কাজ করেন। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বললেই কারও না কারও বিপক্ষে যায় সংবাদ, কারও স্বার্থে লাগে আঘাত। তখন জানে মেরে ফেলার কথাও ভাবেন ওইসব ভদ্রবেশী শয়তানের অনুচরেরা। এ রকম হুমকি-ধমকি, হামলা-মামলা, বিদ্বেষ-রোষানল, ঝড়-তুফান মাথায় নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন মফস্বল সাংবাদিকরা। সাংবাদিকতা ঝুঁকিপূর্ণ পেশা, এই কথা শহুরে সাংবাদিকেরা হয়তো উপলব্ধি করেন কিন্তু মফস্বলে ছুটে বেড়ানো সাংবাদিকেরা তা হাড়ে হাড়ে অনুভব করেন। পুলিশের ভয়ে চোর-মাস্তান, ডাকাত পালিয়ে বেড়ায়। আর অনেক সময় এসব চোর, মাস্তান এবং ডাকাতদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয় মফস্বলের সাংবাদিককে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিগড়ে গেলে এসব সাংবাদিকের এলাকায় টিকে থাকাও অনেক সময় দায় হয়ে পড়ে।

তবে একথাও ঠিক যে, বহু ধরনের টাউট এবং অনেক বখাটে যুবক তথাকথিত সংবাদপত্রের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে নানা ধান্ধাবাজী করে। এসব টাউটদের দৌরাত্ম্যে মফস্বলের অনেক নিবেদিত প্রাণ সাংবাদিক ও যথাযথ মূল্যায়ন পান না। সমালোচনার থাবা থেকে তারাও নিস্তার পান না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ধান্ধাবাজ সব জায়গায় আছে। মফস্বল এবং শহরে ধান্ধাবাজীর ধরন পাল্টালেও চরিত্র পাল্টায় না। আর ধান্ধাবাজ ধান্ধাবাজই। সে কখনো সাংবাদিক হয় না। মফস্বলে কর্মরত একজন সাংবাদিক ক্রাইম রিপোর্ট থেকে শুরু করে একই সাথে স্পোর্টস রিপোর্ট পর্যন্ত করেন। রোদে পুড়ে-বৃষ্টিতে ভিজে কাদা মাড়িয়ে সংগ্রহ করেন গ্রাম-গ্রামাঞ্চলের প্রতিদিনকার সব খবর। অনেক কষ্ট করে পাঠান পত্রিকা অফিসে। পরদিন তার লেখা রিপোর্টটি সংবাদপত্রের পাতায় ছাপার হরফে দেখে এক ‘আহামরি’ সন্তুষ্টি পান মফস্বল সাংবাদিক।
অথচ দেশের অধিকাংশ পত্রিকা এসব সাংবাদিকের টেলিফোন বিলও দেয় না। বেতন-ভাতা তো দূরের কথা। তবুও নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো ছুটেন তারা, কেবলই ছুটে যান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। শখের বশে। মানব প্রেমে। অথবা কোন এক সোনার হরিণের আশায় চলে তাদের পথচলা। অবশ্য আশার কথা হচ্ছে দিনকাল পাল্টাতে শুরু করেছে। কোন কোন সংবাদপত্র মফস্বলে কর্মরত সাংবাদিকদের মূল্যায়ন করতে শুরু করেছে। মফস্বলের অনেক সাংবাদিককে স্টাফ রিপোর্টার পদ মর্যাদাও দেয়া হয়েছে। সম্মানী দিচ্ছে অনেক পত্রিকা। তবে সত্য কথা হচ্ছে তা অতি নগণ্য।’
দেশের প্রান্তিক জনপদের অবহেলিত মফস্বল সাংবাদিকদের পেশাগত মান-উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আর সরকারের সঠিক নীতিমালার বাস্তবায়ন না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তারা। এখন মফস্বল সাংবাদিকদের ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। তাঁদের পেশাগত দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। সাংবাদিকতা হচ্ছে পৃথিবীর সেরা পেশা, আর একটি দেশের ৪র্থ স্তম্ভ। তাই পেশার প্রতি সৎ, সচেতন, দায়িত্ববান, নির্মোহ, নিলোর্ভী হতে হবে।
আমি ছোট একজন সংবাদকর্মী মাত্র। ছোট মুখে বড় কথা বলতে নেই। তার পরও একটু বলি, প্রান্তিক পর্যায়ের মফস্বল সাংবাদিকরা তাদের নায্য অধিকার আদৌ পাবেন কি না তা আমার জানা নাই। তবে বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি ইত্যাদি বিবেচনা করে, সরকার ঘোষিত অষ্টম মজুরি বোর্ডের সুযোগ-সুবিধা মানবিক দিক বিবেচনা করে বাস্তবায়ন করা জরুরি। তা না হলে, মফস্বল সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের জন্য নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। কিন্তু আমাদের দেশের মালিকপক্ষ ও ডাকসাইটের সাংবাদিক নেতারা নিজেদের অধিকার-স্বার্থ নিয়ে নিজেরা অনঢ়। সেখানে পিছিয়ে থাকা-অবহেলিত গ্রামবাংলার সাংবাদিকদের খোঁজ নেওয়ার সময় কী তাঁদের আছে। আমরা তো জীবন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত। শুধু সেইদিনের অপেক্ষায়। একটি ডাক দিলেই হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার মতো ছুটে আসবে গ্রামীণ সাংবাদিকেরা। বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের সেই বজ্রনিনাদ-তেজোদীপ্ত-কালজয়ী ভাষণ কে দেবেন ?
কে ডাকবে আমাদের। আমাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কে বলবে। সেই অপেক্ষায়…।
পরিশেষে,একজন সৎ সাংবাদিক কখনো দেশীয় স্বৈরাচারের কাছে মাথা নত করে না। অতীতেও কেউ করেনি। একজন প্রকৃত সাংবাদিক কখনো অসত্যের কাছে পরাজিত হন না। স্বৈরাচারের বন্দুকের নলের সামনে বসেই সাংবাদিক তুলে ধরেন সত্যকে। দেশ ও জাতির স্বার্থে একজন সাংবাদিক জেল খাটতে এমনকি নিজের জীবন উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। সত্য প্রকাশই সাংবাদিকের ধর্ম, তার পেশা-নেশা ও সাধনা। আর এ কারণেই সংবাদপত্র জাতির কণ্ঠস্বর, সাংবাদিক জাতির মুকুটহীন সম্রাট। যে কোন মূল্যে সাংবাদিকদের এ পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।