আজ বিশ্ব “বাবা দিবস “বটগাছের ছায়া: আমার বাবার স্মৃতিচারণ –
ভিবি নিউজ ডেস্ক -১৫ জুন। বাবা দিবস।
বিশ্ব যখন পিতৃত্ব উদযাপন করছে, আমি ডুবে আছি স্মৃতির গভীরে। ভাবছি আমার বাবা, স্বর্গীয় গোপেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী ওরফে দুলাল বাবুকে নিয়ে। তিনি ছিলেন একজন স্নেহময় পিতা, এক নিঃশব্দ দিকনির্দেশক।
এই বিশেষ দিনটি প্রতিবছর আসে জুনের তৃতীয় রোববারে। সন্তানেরা জানায় কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা।
কেউ উপহার দেয়, কেউ ছবি পোস্ট করে, কেউবা চুপিচুপি শুধু স্মরণ করে।
আমি বাবার একটি ছবি শেয়ার করেছি সামাজিক মাধ্যমে।
ছবির দিকে তাকিয়ে মনে হলো- তিনি যেন এখনো আমাদের মাঝে আছেন। তিনি ছিলেন আমাদের ছায়া। সেই গভীর, বিস্তৃত ছায়া যা গ্রীষ্মের বিকেলে ছাতি দেয়।
বাবার ভালোবাসা ছিল নীরব।
মায়েরা আবেগ দেখান প্রকাশ্যে।
বাবারা করেন নিরবে।
তবু তারাই শক্ত ভরসা।
আমার বাবা কম কথা বলতেন।
কখনো নিজের ভালোবাসা মুখে আনেননি।
তবুও তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি ত্যাগে ছিল নিঃস্বার্থ মমতা। আমি এখন নিজেও একজন বাবা। বাবা হওয়ার পর বুঝেছি- কতটা বড় তার ছায়া ছিল। কতটা দৃঢ়, কতটা নিঃশব্দ
একটা কথা প্রায়ই মনে পড়ে যায়-
‘বাবার ছায়া শেষ বিকেলের বটগাছের মতো। সে নিজের সব ক্লান্তি রেখে ঢেকে রাখে সন্তানের মঙ্গলহায়া হয়ে।’
তার জ্ঞান, দেশপ্রেম আর সাহস তাকে করে তুলেছিল অমূল্য।
কারও বাহবা চাওয়ার লোক ছিলেন না তিনি।
মানুষের পাশে থেকে বিপদে আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন,
শিক্ষা, সমাজসেবা, এলাকার উন্নয়নে যুক্ত,
ছিলেন শিক্ষানুরাগী, কঠোর পরিশ্রমী ও অসাধারণ বিনয়ী।
১৯৯৬ সালের ২ নভেম্বর তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। রেখে যান আত্মীয়স্বজন অসংখ্য গুণগ্রাহী বন্ধু বান্ধব।
উত্তরাধিকার।
আমরা বাবার সঙ্গে বেশি সময় পাইনি।
তবু তার আদর্শ আজও আমাদের পথ দেখায়।
তিনি ছিলেন সাহসের প্রতীক,
শান্ত আত্মবিশ্বাসের এক নাম দুলাল বাবু,
আমি গর্ব করি- আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
আমরা ভাইবোনেরা এখন স্বনির্ভর।
আমি একজন সংবাদ কর্মী, জেলা সহ দেশের আনাচকানাচে ঘটে যাওয়া বস্তুনিষ্ঠ নিরপেক্ষ সংবাদ তুলে জাতীর নিকট উপস্থাপন করাই একজন সংবাদ কর্মীর আদশ্ব, মাঝে মধ্যে ঝুঁকির আওতায় পড়ে যেতে হয়। পাশাপাশি আমি একজন ঔষধ ব্যবসায়ী।
দেশের নানা ক্ষেত্রে কাজ করছি।
বাবার শেখানো সততা ও দেশপ্রেম আমাদের চালিত করে।
বাবা দিবসের মানে।
এই দিনটি কেবল স্মরণ করার নয়-এটি শিক্ষা নেয়ার দিন।
বাবার আদর্শ, দায়িত্ববোধ, নিঃশব্দ ভালোবাসাকে মনে রাখার দিন। আমার বাবা ছিলেন এক নিভৃতচারী যোদ্ধা।
একজন পিতা যিনি শিখিয়েছেন মাথা উঁচু করে চলতে। আজ, এই দিনে আমি শুধু বলি-
আমার বাবা একজন বীর ছিলেন। তাঁকে ভোলা যায় না। কখনো না।
ভাস্কর বসু রায় চৌধুরী,
০১৭১২৭৩৫৯৮৪






