মাদক, অস্ত্র ও ওয়াকিটকিসহ গ্রেফতার ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে র্যাব। এছাড়াও ইরফান সেলিমের সহযোগী এমডি জাহিদের বিরুদ্ধেও পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
তিনি বলেন, গত সোমবার রাতে কাউন্সিলর মো. ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী এমডি জাহিদকে গ্রেফতারের পর গতকাল
মঙ্গলবার দু’জনের নামে পৃথক ৪টি মামলা হয়েছে। সব মামলায় অস্ত্র ও মাদক আইনে হয়েছে। র্যাব বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলাগুলো করেছে। গত রোববার রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রোববার রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও সোমবার ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, তোর নৌবাহিনী/ সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব। এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিল ঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এই ঘটনার পর গত সোমবার কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ইয়াবা, অস্ত্র ও অবৈধ ওয়াকিটকি। পরে র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান সেলিমকে মাদক সেবনের দায়ে এক বছর এবং অবৈধভাবে ওয়াকিটকি ব্যবহার করায় ৬ মাস কারাদ- দেন। এছাড়া ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে এক বছরের কারাদ- দেয়া হয়। গত সোমবার রাতে ইরফান সেলিমকে কারাগারে পাঠায় র্যাব।
এদিকে নৌবাহিনী কর্মকর্তার দায়ের করা হত্যা চেষ্টা মামলায় ইরফানের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। আজ বুধবার এ ব্যাপারে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
অভিযান চলাকালে ডিএসসিসির ৩০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান মো. সেলিমের বাসায় একটি লাইসেন্সবিহীন বিদেশি পিস্তল, একটি এয়ারগান, ৩৮টি ওয়াকিটকি, পাঁচটি ভিপিএস মেশিন, একটি হ্যান্ডকাফ, পাঁচ লিটার বিদেশি মদ, ৪০০ পিস ইয়াবা ও ১২টি বিয়ারের বোতল পাওয়া যায়। সেখানে একটি টর্চার সেলের সন্ধানও পাওয়া যায়। তার কাছে যে ওয়াকিটকি সেট ও নিয়ন্ত্রণ মেশিনগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো দিয়ে পাঁচ থেকে ১০ কিলোমিটার নেটওয়ার্কে কথা বলা যায়। অভিযানের সময় ভিআইপিদের নিরাপত্তায় ব্যবহৃত একটি ব্রিফকিসও পাওয়া গেছে।