ভিবি নিউজ-চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে আবারও পদ্মা-মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে নেমে আসা বন্যার পানির প্রবল স্রোতে গত কয়েক দিন ধরে নদী ভাঙন দেখা দেয়।
১৭ জুলাই শুক্রবার দিনভর পদ্মানদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙনের ভয়াবহতা আরও বেড়ে যায়। এ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে তিনতলা বিশিষ্ট সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত রাজরাজেশ্বর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার।
মাত্র এক মাস আগে দৃষ্টিনন্দন এই ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এছাড়াও গত কয়েক দিনের ভাঙনে প্রায় ২ শতাধিক বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আরও প্রায় ৫শ’ বাড়িঘর ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।
ভাঙনের শিকার স্থানীয়রা বলেন, জোয়ার শেষে ভাটার সময়ে ভাঙন শুরু হয়। তবে গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এবারই ভাঙনের ভয়াবহতা চরম পর্যায়ে চলে গেছে।
কারণ, এবছর পাশ্ববর্তী জেলা শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ এলাকায় মেঘনার ভাঙনরোধে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছে তার পানি প্রবাহের মুখটি দেওয়া হয়েছে রাজরাজেশ্বরের দিকে। ফলে ওই জেলার দেওয়া বাঁধের ধাক্কা খাওয়া স্রোত ঝুঁকিপূর্ণভাবে এখানকার পাড়ে আঘাত হানছে।
ভাঙনের শিকার ওমর আলী স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারের ঠিকাদার প্রতিনিধি ও ইউপি সদস্য পারভেজ গাজী রণি জানান, ঐতিহ্যবাহী ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রায় ৭-৮ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে।
ফলে এখানকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া এবং ইউনিয়নবাসীর কথা চিন্তা করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি এখানে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যায়ে তিন তলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টার করে দিয়েছেন।
এই ভবনটির সাইড সিলেকশনের সময় নদী এখান থেকে বহু দূরে ছিল। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে আমরা খুব দ্রুত মানসম্মতভাবে এই ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করি। গত একমাস আগে কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করেছি।
তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে নবনির্মিত ভবনটিতে বিদ্যালয়ের ক্লাস চলার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ফণীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জনান, সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও নিম্ন মানের কাজের কারনে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত তিন তলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টারটি উদ্ভোধনের এক মাসের মাথায় তা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, ওই এলাকাটি খুবই ভাঙনপ্রবণ। পদ্মা-মেঘনার মতো দুটি বড় নদী ভাঙছে। আমরা ওই এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি দেখবো। তারপর করণীয় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।